চিকুনগুনিয়া জ্বর নিরাময়ে হোমিও চিকিৎসা

চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত জ্বর। এ রোগের সঙ্গে ডেঙ্গু জ্বরের কিছুটা মিল রয়েছে।

চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত জ্বর। এ রোগের সঙ্গে ডেঙ্গু জ্বরের কিছুটা মিল রয়েছে। ডেঙ্গুর মতোই এ ভাইরাসটি এডিস ইজিপ্টাই এবং এডিস অ্যালবপ্টিকাস মশার কামড়ে হয়।

রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ : সাধারণত মশা কামড়ানোর ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এ জ্বরের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। অনেক ক্ষেত্রে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। চিকুনগুনিয়া জ্বরে অসহ্য মাথাব্যথা হতে পারে। এ জ্বরের কারণে দীর্ঘসময় ধরে মাথাব্যথা থাকতে পারে, যা শারীরিকভাবে কষ্ট দেওয়ার পাশাপাশি ঘুমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটায়। এ জ্বর হলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে বারবার বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। জ্বর ও ব্যথায় কাতর হয়ে অনেকের মধ্যে অবসাদের প্রভাব পড়ে। ফলে কাজে মনোযোগে বিঘœ ঘটে। অনেক ক্ষেত্রে চোখ লাল হয়ে যায় বা চোখের মধ্যে ব্যথা অনুভূত হয়। অনেক সময় চোখের ব্যথা এত বাড়ে, আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা হয় এবং চোখ জ্বালাপোড়া করে।

সাধারণত বয়স্কদের ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা বেশি হয় এবং উপসর্গ থাকে দীর্ঘদিন। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর ভালো হয়ে গেলেও দুর্বলতা বা ক্লান্তি লাগতে পারে কিন্তু এত দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে ব্যথা বা অন্য লক্ষণগুলো থাকে না। আবার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্তক্ষরণ হয়, যা অনেক সময় খুব ভয়াবহ হতে পারে। কিন্তু চিকুনগুনিয়া রোগে ডেঙ্গু জ্বরের মতো রক্তক্ষরণ হয় না এবং রক্তের প্লাটিলেট খুব বেশি কমে না।

চিকিৎসা : চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা মূলত রোগের উপসর্গ নিরাময়ের মাধ্যমে করতে হয়। ওহোমিপ্যাথি চিকিৎসা হয়ে থাকে সাদৃশ্য বিধানমতে। রোগীর শারীরিক ও মানসিক লক্ষণ সাদৃশ্যের সমষ্টির ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাই এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে হোমিওপ্যাথি ওষুধ কার্যকর।

পরামর্শ : এ রোগে আক্রান্ত রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। প্রচুর পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। ডাবের পনি, মিছরির পানির শরবত খেতে হবে। অল্প অল্প করে বারবার খেতে হবে। বারবার শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে। কোনো অবস্থায় ব্যথার ওষুধ সেবন করা যাবে না। নিজে নিজে কোনো ওষুধও খাওয়া ঠিক নয়। রোগীকে যেন মশা না কামড়ায়, সে জন্য মশারি ব্যবহার করতে হবে। কারণ আক্রান্ত রোগীকে কামড় দিয়ে পরবর্তী সময় কোনো সুস্থ মানুষকে সেই মশা কামড়ালে সুস্থ ব্যক্তিও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।