সরকার ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন কিনে নিচ্ছে

ঢাকার টিকাটুলিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন পুরাকীর্তি রোজ গার্ডেন বাড়িটি মালিকের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছে সরকার। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এর জন্য সরকারের ব্যয় হবে ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। পুরান ঢাকার টিকাটুলিস্থ কে এম দাস লেনের ঐতিহ্যবাহী ভবন এই রোজ গার্ডেন। তৎকালীন নব্য জমিদার হৃষীকেশ দাস ১৯৩০ সালের দিকে গড়ে তোলেন এ গার্ডেন।

অদ্বিতীয় গোলাপ বাগানসমৃদ্ধ বাড়ি হওয়ার করণে এর নাম হয় রোজ গার্ডেন। হৃষীকেশ এ বাগানের জন্য চীন, ভারত, জাপান ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে মাটিসহ গোলাপের চারা এনে লাগিয়েছিলেন বলে জানা যায়।গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন অনুসারে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বর্তমান মালিকদের কাছ থেকে রোজ গার্ডেন কিনবে সরকার।

জানা যায়, এই ভবনেই গড়ে ওঠে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই রোজ গার্ডেনেই গঠিত হয়েছিলো পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ যা ১৯৫৫ সালে নতুন নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। রোজ গার্ডেন বর্তমানে নাটক ও টেলিফিল্ম শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

পরবর্তীতে তিনি ঋণের দায়ে জৌলুশপূর্ণ বাগানবাড়িটি ১৯৩৬ সালে খান বাহাদুর মৌলভী কাজী আবদুর রশীদের কাছে বিক্রি করে দেন।সত্তর সালের দিকে রোজ গার্ডেন লিজ দেওয়া হয় বেঙ্গল স্টুডিওকে। ১৯৮৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ রোজ গার্ডেনকে সংরক্ষিত ভবন বলে ঘোষণা করে। এর পর ১৯৯৩ সালে রোজ গার্ডেনের অধিকার ফিরে পান কাজী আবদুর রশিদের মেজো ছেলে কাজী আবদুর রকীব। ১৯৯৫ সালে তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী লায়লা রকীব ওই সম্পত্তির মালিক হন।

মৌলভী কাজী আবদুর রশীদের কাছ থেকে ১৯৬৬ সালে রোজ গার্ডেনের মালিকানা পান তার বড় ভাই কাজী হুমায়ুন বশীর। এ কারণে সে সময় ভবনটি হুমায়ুন সাহেবের বাড়ি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *