শান্তিনিকেতন

‘শান্তিনিকেতন’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে শান্তির আবাসভূমি। আজকাল অনেক পর্যটকই শান্তির খোঁজে প্রকৃতি ঘেরা এ শহরে ঘুরতে যান।

‘শান্তিনিকেতন’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে শান্তির আবাসভূমি। আজকাল অনেক পর্যটকই শান্তির খোঁজে প্রকৃতি ঘেরা এ শহরে ঘুরতে যান।

কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনের দুরত্ব ২১২ কিলোমিটার। বাস ছাড়া, আকাশপথ কিংবা কলকাতার শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ে সহজেই যাওয়া যায় এ শহরে।

শান্তিনিকেতন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের কাছে অবস্থিত একটি আশ্রম ও শিক্ষাকেন্দ্র। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বোলপুর শহরের উত্তরাংশে এ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা কালক্রমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নেয়।

শান্তিনিকেতনে যাওয়ার পর কেউ যদি এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়টি না দেখেন তাহলে তার ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যাবে। বিশ্বভারতীয় ক্যাম্পাসটি দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে রয়েছে স্কুল শাখা, অন্য ভাগে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা চলে।

এখানে কলেজ অব হিউম্যানিটিজের জন্য বিদ্যাভবন, কলেজ অব সায়েন্সের জন্য শিক্ষাভবন, কলেজ অব ফাইন আর্টসের জন্য কলাভবন, কলেজ অব মিউজিকের জন্য সংগীতভবন, টিচার্স ট্রেনিংয়ের জন্য রয়েছে বিনয়ভবন, কৃষিবিদ্যার জন্য রয়েছে পল্লীশিক্ষাভবন, আর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের জন্য রয়েছে শিক্ষাচর্চা ভবন রয়েছে।

এখানে রয়েছে ঠাকুরের আশ্রম, যা শহরের অন্যতম শ্রদ্ধেয় একটি স্থান। ১৮৬৩ সালে দেবেন্দ্রনাথ আশ্রমটি নির্মাণের পর থেকেই স্থানীয় কর্তৃপক্ষই জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবাসস্থলও ছিল। এখান বসেই তিনি অনেক সাহিত্য কর্ম রচনা করেছেন।

এখানে গেলে রবীন্দ্র ভবন জাদুঘরটিও পরিদর্শন করতে পারেন, যেখানে রবীন্দ্রনাথের লেখার মূল পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র, হাতে আঁকা ছবি, প্রশংসাপত্র এবং ফটোগ্রাফ রয়েছে। জাদুঘরে রবীন্দ্রনাথের পাওয়া সেই নোবেল পুরস্কারের মেডেলও রয়েছে।

পর্যটকদের জন্য শান্তিনিকেতনে আছে উপাসনা ঘর এবং প্রার্থনার হল। এ শহরে প্রার্থনার জন্য বেলজিয়ান কাঁচের তৈরি জাকজমকপূর্ণ ভবনও রয়েছে যেটাকে ‘কাঁচ মন্দির’ বলা হয়। প্রতি বুধবার এ ভবনে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

শান্তিনিকেতনে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় শীতকাল। তবে সারাবছরই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের খোঁজে পর্যটকরা এখানে ভিড় করেন।