Category: রূপচর্চা

রূপচর্চার জন্য কাঁচা হলুদ

No Comments

হলুদ ত্বক উজ্জ্বল করে, ব্রণ র‌্যাশ দূর করতে এবং ফাঙ্গাস ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।
বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে হলুদ। হলুদের গুঁড়া, মাষকলাইয়ের ডালের সঙ্গে টমেটোর রস বা কমলার জুস দিয়ে মুখে লাগাতে হবে। এই মিশ্রণ কিছুক্ষণ ত্বকে রেখে কুসুমগরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। হলুদের সঙ্গে চন্দন বা ময়দা মিশিয়ে চোখের নিচে লাগালে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে। শরীর থেকে স্ট্রেচমার্ক দূর করতে হলুদের সঙ্গে তেল ও সুজি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে স্ক্রাবিংয়ের কাজটাও হবে।
হলুদের সঙ্গে ঘৃতকুমারী (অ্যালোভেরা) মেশালে জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। রোদে পোড়া ভাবও দূর করে এই মিশ্রণ। দুধের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া মিলিয়ে খেলে চেহারায় উজ্জ্বলতা আসে। দুধের সরের সঙ্গে অল্প পরিমাণ হলুদ মিলিয়ে লাগাতে পারেন ত্বকেও।
ত্বকের শুধু হলুদ লাগানোর পরে রোদে গেলে ত্বক বার্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে জন্য কিছু না কিছু মিলিয়ে লাগাতে হবে। হলুদ দীর্ঘদিন সংগ্রহ করে রাখতে চাইলে ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই গুঁড়া করার পর আবারও ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে।
আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা বলেন, ত্বকের জন্য কোনো কিছুই বেশি ব্যবহার করা ঠিক না। তাহলে ত্বকের স্বাভাবিক তেলটাও নষ্ট হয়ে যায়। সপ্তাহে দুই দিনের বেশি কোনো প্যাক ব্যবহার করলে সেটা ত্বকের ক্ষতিই করে।

সাধারণভাবে সবাই এটাকে মসলা হিসেবে জানলেও এর অবস্থান শুধু রান্নাঘরেই আটকে নেই। অনেক আগে থেকেই রূপচর্চার জন্য ব্যবহার হয় হলুদ। তাই এটাকে পরীক্ষিত ভেষজ রূপচর্চার উপকরণও বলা যায়।
যাঁদের তৈলাক্ত ত্বক তাঁরা কাঁচা হলুদ, দুধের সর, মধু মিশিয়ে লাগাতে পারেন। ত্বক শুষ্ক হলে এর সঙ্গে যোগ করে নিতে পারেন জলপাই তেল বা নারকেল তেল। এই মিশ্রণ সানট্যান ও দাগ দূর করবে।
ব্রণের সমস্যা থাকলে কাঁচা হলুদ, টকদই ও নিমপাতা মিশিয়ে লাগাতে পারেন। স্বাভাবিক ত্বকে কাঁচা হলুদ, দুধ ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
সকালে কুসুমগরম দুধে কাঁচা হলুদের গুঁড়া বা রস মিশিয়ে খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। ফলে ভেতর থেকে ত্বক উজ্জ্বল হয়। চাইলে দুধ, হলুদ ও মধু দিয়ে মিল্ক শেক বানিয়ে খেতে পারেন।
দিনশেষে আমাদের প্রকৃতির কাছেই ফিরতে হবে। তাই নিজেকে সুন্দর করার ভারও দিতে পারেন প্রাকৃতিক উপাদানকেই।

ব্রণ দূর করতে হলুদের সঙ্গে নিম পাউডার, চন্দনের গুঁড়া আর মধু মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। লোমকূপের তেল দূর করতে সাহায্য করে হলুদ। চন্দনের গুঁড়া, কমলা বা মাল্টার রসের সঙ্গে অল্প হলুদ ভালো করে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে লোমকূপের ভেতরের তেল দূর হয়ে ত্বক স্বাভাবিক হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য হলুদের গুঁড়া, কমলা বা মাল্টার রস, ডিমের সাদা অংশ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

বৈশাখের রূপচর্চা

No Comments

বৈশাখ মানেই উৎসব, অতিথি আপ্যায়ন, ঘুরে বেড়ানো- এক কথায় দারুণ ব্যস্ততা।

বৈশাখে ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত। বৈশাখে ত্বকের সজীবতা বাড়িয়ে সবার কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য রইল কিছু ঘরোয়া উপায়;

ত্বকের যত্ন:
বৈশাখে ত্বককে প্রাণবন্ত দেখানোর জন্য ত্বকের ক্লান্তি দূর করা জরুরি। ত্বককে প্রাণবন্ত করে তুলতে মধুর সঙ্গে মাল্টার রস মিশিয়ে মিশ্রণটি ত্বকে ব্যবহার করুন। কিছুক্ষণ পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের পাশাপাশি ত্বকের বলিরেখা দূর হবে।

রোদ-বৃষ্টিতে শপিং মলে দৌড়ঝাঁপ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই উজ্জ্বলতা বাড়াতে সপ্তাহে দু-তিন দিন ফেশিয়াল স্ক্রাবার ব্যবহার করুন।

ওটমিলের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ ভালো করে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ভেজা হাতে হালকা ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। একইভাবে মধু, লেবুর রস এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়েও ট্রাই করতে পারেন। কিছুদিন পর দেখবেন, ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে এসেছে। এছাড়া দুধের সরের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ ও কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে উপরের দিকে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করুন পাঁচ মিনিট। এরপর পানি ঝাপটা দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে এই মিশ্রণ প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

চুলের যত্ন:
যাদের চুল শুষ্ক, তারা প্রতিদিন ঘুমানোর আগে হালকা গরম তেল ব্যবহার করবেন। আর যাদের চুল তৈলাক্ত, তারা একদিন অন্তর তেল ব্যবহার করতে পারেন। তাড়া থাকলে তেল এক ঘণ্টা রেখেও চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন।

তেল ব্যবহারের পর একটা বড় তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে নিন। এরপর তোয়ালে চুলে ১০ মিনিট পেঁচিয়ে রাখবেন। সব ধরনের চুলেই এটি করা যাবে।

চুলে কালারিং করালে চুলের যথাযথ যত্ন নেওয়া জরুরি। কালারিংয়ের পরে যে প্রডাক্ট ব্যবহার করবেন, সেগুলো যেন মাইন্ড হয়। সুইমিং এড়িয়ে চলুন। রং ধরে রাখতে কালার প্রোটেকশন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। এতে উজ্জ্বল ও ঘন দেখাবে। চুলকে উজ্জ্বল দেখানোর জন্য সিরাম ব্যবহার করতে পারেন।

গলা ও ঘাড়ের যত্ন:
শুধু ত্বকের যত্ন নিলেই তো হবে না, সঙ্গে ঘাড় ও গলার যত্নও নিতে হবে। তাই সারা দিনে খুব বেশি নয়, মাত্র ১০ মিনিট সময় বের করে একটু যত্ন নিন। গোসলের আগে দুধের সর, চালের গুঁড়া, বেসন, টক দই ও কাঁচা হলুদ বাটা একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন।

সপ্তাহে অন্তত তিন দিন প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। শুকিয়ে গেলে আলতো ঘষে গোসল সেরে নিন। ত্বক নরম হবে, ডার্ক প্যাঁচের সমস্যাও কমবে।

হাত-পায়ের যত্ন:
সারা দিন বাইরে ঘোরাঘুরি করার পর দেখা যায়, হাত-পায়ে ময়লা জমে বেশি। তাই বাড়িতে ফিরে শ্যাম্পু ও লেবুর রস মেশানো হালকা গরম পানিতে হাত-পা ১০ থেকে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। পায়ের গোড়ালি ঝামা দিয়ে আলতো করে ঘষে মরা কোষ তুলে ফেলতে হবে। আর নরম ব্রাশ দিয়ে হাত-পায়ের ত্বক ঘষলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

সপ্তাহে এক দিন মুলতানি মাটি ও হলুদগুঁড়ার পেস্ট হাত-পায়ে ব্যবহার করতে পারেন। পুরো শরীরে প্যাক ও স্ক্রাবিং বিশেষজ্ঞ কারও কাছে করানোই ভালো।